প্রথম রেলযাত্রা রাজধানীর পানে
আমার ছোটবেলা থেকেই ট্রেনে ভ্রমণের অনেক শখ ছিল। কিন্তু তা ঠিক হয়ে উঠছিল না। আসলে সেই সুযোগটা পাইনি সেভাবে।প্রথম ট্রেন যাত্রাটা ছিল কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রাজশাহী। খুব বেশি সময়ের যাত্রা ছিল না। কিন্তু আমার মনে ছিল একটি দীর্ঘ রেল যাত্রা উপভোগ করার আকাঙ্ক্ষা। মনে একটি আশা ছিল হয়তো খুব শীঘ্রই একটি ৫- ৬ ঘন্টার যাত্রার সুযোগ পেয়ে যাব।
2019 সালে এসএসসি দেওয়ার পর নতুন কলেজে ভর্তির জন্য সুযোগটি পেয়ে গেলাম। এবং প্রায় তিন চারবার ট্রেন যাত্রা উপভোগ করতে পেরেছিলাম এক মাসের মধ্যেই। আমার নবম শ্রেণী থেকেই স্বপ্ন জাগে বাংলাদেশের সেরা কলেজ নটরডেম কলেজে অধ্যয়নের। কেননা সে বছর আমাদের স্কুল থেকে আমাদের এক বড় ভাই নটরডেম কলেজে চান্স পায়। তো যাই হোক 2019 সালে এসএসসি দেওয়ার পর নটরডেম কলেজে এডমিশনের সময় এসে যায়। আর একটি রেল যাত্রার সুযোগও চলে আসে।
তো রেল যাত্রার অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু বলা যাক। আমাদের ট্রেন ছিল দুপুর 12 টা 50 মিনিটে ভেড়ামারা রেল স্টেশন থেকে আমার যাত্রাসঙ্গী ছিলেন আমার শ্রদ্ধেয় মামা। যিনি আমাকে অনেক ছোট থেকে পড়াশোনার দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছিলেন। তার লক্ষ্য যে তিনি আমাকে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন। তো তিনিও বেশ ভ্রমণপিয়াসু মানুষ। আমরা স্নিগ্ধা কম্পার্টমেন্টে টিকিট কেঁটেছিলাম। আমার সিটটা ছিল জানালার পাশে আর আমার পাশেই বসেছিলেন আমার শ্রদ্ধেয় মামা।
পুরোটা পথ জানালা দিয়ে বাংলার প্রকৃতি, মানুষের বসতি, কর্মব্যস্ততা, ফসলি জমি, নদী, বিল ইত্যাদি দেখতে দেখতে ছুটে চললাম রাজধানীর পথে। কিন্তু প্রথম যাত্রাতেই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সাক্ষী হতে হয়েছিল আমাকে। ঠিক আমার সামনের জানালাতে একটি পাথর এসে লাগে এবং জানালাটি ফেটে যায়। পাথরটি একজন যাত্রীর কাধে এসে লাগে। আমি বেশ অবাক হয়ে গেলাম। কিন্তু মামা বললেন প্রায়ই নাকি এমনটা ঘটে থাকে। ব্যথিত হলাম। আসলে আমাদের জাতীয় সম্পত্তি আমরা নিজেরাই কিভাবে নষ্ট করছি। তাছাড়া মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছি। যদিও বসে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম তারপরেও পুরোটা পথ বেশ উপভোগ করেছি। বাংলাদেশের রেলের একটি বড় সমস্যা হল সময় মেইনটেইন করতে না পারা। তাছাড়া ক্রসিংয়ের সমস্যা তো আছেই তা পরবর্তী ভ্রমণগুলো থেকে বুঝতে পেরেছি। মোটামুটি সাড়ে ছয় ঘণ্টায় যাত্রা শেষে সন্ধ্যার পর ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশনে আমরা পৌঁছাই। কমলাপুর রেলস্টেশন বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা যেটা সম্পর্কে বই এ জেনেছিলাম। কিন্তু সেই প্রথম নিজের চোখে ঘুরে ঘুরে দেখেছিলাম আমি মামার সাথে। কয়েকটা ছবি তুলেছিলাম। তারপর আমরা চেক আউট করে রেস্ট হাউস চলে যাই রিক্সা করে। ঢাকা শহরে রিক্সা যেটা আমার কাছে নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। অবশেষে রিক্সার অভিজ্ঞতাটাও হয়ে যায়। তো বিভিন্ন বিচিত্র অভিজ্ঞতার মধ্য থেকেই সেবারের রেল ভ্রমণ সম্পন্ন হয়েছিল এবং অনেকদিনের আশা পূর্ণ হয়েছিল আলহামদুলিল্লাহ।😊
![]() |
মামা এবং আমি |
লেখার মধ্যে কিন্তু তোর কবি কবি ভাব প্রকাশ পাচ্ছে রে🥰
ReplyDeleteবাইরে থেকে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করাটা বর্তমানে অনেক সাধারণ একটা ঘটনা হয়ে গেছে,যেটা আমাদের জন্যে সত্যিই লজ্জাকর একটা বিষয়😌
তবে তোর অভিজ্ঞতা ভালই ছিল😊
Thank you Hridoy. 🧡🧡
Delete